সেরা ১০ ক্যামেরা ফোন [২০২১]
একসময় মোবাইল ফোন শুধু যোগাযোগের কাজেই ব্যবহার করা হলেও সময়ের বিবর্তনে মোবাইল ফোনের কাজের পরিধি এখন অনেক বিস্তৃত।
এখন হাতের কাছে থাকা স্মার্টফোন দিয়েই অনেক প্রয়োজনীয় কাজই সেরে নেয়া যায়। যেমনঃ স্মার্টফোন ব্যবহার করে ছবি তোলা।
প্রতিবছর স্মার্টফোনগুলো যেমন শক্তিশালী হচ্ছে তেমনি এতে যুক্ত হচ্ছে উন্নত থেকে উন্নতর ক্যামেরা প্রযুক্তি। এখন সাধারণ স্মার্টফোনগুলোতেও একের অধিক ক্যামেরা দেখতে পাওয়া যায়।
আজকের আর্টিকেলে বর্তমান সময়ের ১০টি সেরা ক্যামেরা ফোন নিয়ে আলোচনা করা হলো। তো আর কথা না বাড়িয়ে একনজরে দেখে নেয়া যাক সেরা ক্যামেরা ফোন তালিকায় কোন কোন স্মার্টফোন রয়েছে?
আরও পড়ুনঃ
- ২০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা স্মার্টফোন
- সেরা ১০ অ্যান্ড্রয়েড ফটো এডিটিং অ্যাপ
- সেরা ১০ ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড এন্টিভাইরাস
- সেরা ৮ গেমিং স্মার্টফোন
সেরা ১০ ক্যামেরা ফোন ২০২১
1. Apple iPhone 12 Pro
সেরা ক্যামেরা ফোন এর কথা বললে সবার আগে নাম আসে অ্যাপলের আইফোন সিরিজের। অ্যাপলের তৈরি আইফোনের ক্যামেরা সবসময় উন্নত হয়ে থাকে। iPhone 12 Pro এর ক্যামেরার ক্ষেত্রেও কোন ব্যতিক্রম নয়।
এবারের আইফোন ১২ প্রো-এ থাকছে ১২ মেগাপিক্সেল ট্রিপল লেন্স সেটাপ; প্রাইমারি লেন্স এফ/১.৬ অ্যাপারচারের, টেলিফটো লেন্স এফ/২.০ অ্যাপারচারের, আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স এফ/২.৪ অ্যাপারচারের। এতে একটি ToF 3D ডেপথ-সেন্সিং লেন্সও থাকছে।
আর ফোনটির সামনে থাকছে ১২ মেগাপিক্সেল ডুয়েল লেন্স এবং এসএল 3D ডেপথ-সেন্সিং লেন্স। ফোনটিতে স্মার্ট এইচডিআর এবং ডেপথ কন্ট্রোল ফিচারও থাকছে।
ফটো তোলার ক্ষেত্রে অ্যাপলের ফোনগুলো সাধারণত কম প্রসেসিং করে থাকে, ফলে ছবি তোলার পর তা দেখতে অনেকটাই জীবন্ত লাগে হুয়াওয়ে বা স্যামসাং এর ফ্ল্যাগশিপ ফোনগুলোতে তোলা ছবির তুলনায়।
আইফোন ১২ প্রো দিয়ে অন্যান্য ফোনের তুলনায় কম আলোতে অসাধারণ সব ফটো তোলা যাবে। অ্যাপল এর দাবি, গতবছরের আইফোন অপেক্ষা ২৭% ভালো লো-লাইট ছবি তুলতে পারবে এইবছরের আইফোন ১২ প্রো। ফোনটিতে থাকা নাইট মোড রাতের বেলা কিংবা কম আলোয় ছবি তোলার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হবে।
এবারের আইফোন ১২ প্রো-তে 'লিডার' (লাইট ডিটেকশন অ্যান্ড রেঞ্জিং) স্ক্যানার সংযুক্ত করা হয়েছে। এটি আশেপাশের পরিবেশের জন্য একটি ডেপথ ম্যাপ তৈরি করে কম আলোতে অটোফোকাস 'ছয় গুণ দ্রুততায়' করতে সাহায্য করে।
ফোনটির টেলিফটো লেন্সের সাহায্যে তোলা বেশি দূরত্বের ফটোগুলোতেও পর্যাপ্ত ডিটেইলস পাওয়া যাবে। ৫২ ন্যানোমিটারের টেলিফটো লেন্স দিয়ে ৪এক্স অপটিক্যাল জুম-ইন শট নেওয়া সম্ভব। আইফোন ১২ প্রো দিয়ে পোট্রেট মোডেও ভালো ফটো তোলা যাবে।
ফোনটির পেছনে থাকা তিনটি ক্যামেরার মাধ্যমে ৬০ ফ্রেম রেটে ৪কে রেজ্যুলেশনে ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে। এছাড়া ফোনটির ক্যামেরা অ্যাপ ব্যবহার করাও অনেক সহজ।
2. Samsung Galaxy S21 Ultra
স্যামসাংয়ের এস-সিরিজের স্মার্টফোনগুলো সবসময়ই চমক দেখিয়ে থাকে। এবারেও এস-সিরিজের স্মার্টফোন Samsung Galaxy S21 Ultra চমক দেখিয়েছে হাই স্পেকের সাথে উন্নত ক্যামেরার মাধ্যমে।
নিসন্দেহে এর ক্যামেরা যেকোনো ভালো মানের ডিএসএলআর ক্যামেরাকেও হার মানাবে। স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২১ আল্ট্রা ফোনে রয়েছে কোয়াড ক্যামেরার এক দূরদান্ত সেটআপ।
এতে থাকছে এফ/১.৮ অ্যাপারচারের একটি ১০৮ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি লেন্স, এফ/৪.৯ অ্যাপারচারের একটি ১০ মেগাপিক্সেল পেরিস্কোপ টেলিফটো লেন্স, এফ/২.৪ অ্যাপারচারের একটি ১০ মেগাপিক্সেল টেলিফটো লেন্স এবং এফ/২.২ অ্যাপারচারের একটি ১২ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স।
ফোনটির ক্যামেরার একটি অসাধারণ ফিচার হলো এর টেলিফটো লেন্সের ব্যবহার। টেলিফটো লেন্সের মাধ্যমে ১০x অপটিক্যাল জুমের পাশাপাশি ১০০x জুমে ছবি তোলা সম্ভব।
গ্যালাক্সি এস২০ স্মার্টফোনের মতো এতেও প্রাইমারি এবং টেলিফটো সেন্সর দুটিতে সুপার-ফাস্ট অটোফোকাস এবং ওআইএস (অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন) ফিচার রয়েছে।
ফোনটিতে থাকা ক্যামেরাগুলোর মাধ্যমে ২৪/৩০ ফ্রেম রেটে ৮কে রেজ্যুলেশনের ভিডিও ধারণ করা যাবে। এছাড়াও এর সাহায্যে ৬০ ফ্রেম রেটে ৪কে ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে। আর ২৪০ ফ্রেম রেটে ১০৮০পি রেজ্যুলেশনে সুপার স্লো-মোশন ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে।
স্যামসাং এর এই ফোনটির সামনে রয়েছে এফ/২.২ অ্যাপারচারের একটি ৪০ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা। এর সামনের ক্যামেরা দিয়েও ৪কে রেজ্যুলেশনে ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে।
3. Huawei P40 Pro
সেরা ক্যামেরা ফোন লিস্টের ৩য় স্থানে রয়েছে Huawei P40 Pro। এই ফোনটির ক্যামেরা এক কথায় অসাধারণ। দারুণ সব ফটো ক্যাপচার করা যাবে এই স্মার্টফোনের ক্যামেরা ব্যবহার করে।
হুয়াওয়ের এই স্মার্টফোন মোবাইল ফটোগ্রাফিকে এক অন্য লেভেলে নিয়ে গিয়েছে। Huawei P40 Pro এর পিছনে থাকছে কোয়াড ক্যামেরা সেটআপ।
এতে রয়েছে একটি এফ/১.৯ অ্যাপারচারের ৫০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি লেন্স, একটি এফ/৩.৪ অ্যাপারচারের ১২ মেগাপিক্সেল টেলিফটো লেন্স, একটি এফ/১.৮ অ্যাপারচারের ৪০ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স এবং একটি ToF 3D ডেপথ-সেন্সিং লেন্স।
স্মার্টফোনটি দিয়ে লো-লাইটে অসাধারণ সব ফটো ক্যাপচার করা যাবে। পাশাপাশি এর 'পেরিস্কোপ' টেলিফোটো লেন্স দিয়ে অপটিক্যালভাবে চমৎকার জুম-ইন শট নেওয়া যাবে। ফোনটিতে ৫x অপটিক্যাল জুম ছাড়াও থাকছে ৫০x ডিজিটাল জুম ব্যবহারের সুবিধা।
অন্যান্য স্মার্টফোন যেখানে ট্রেডিশনাল RGB (red green blue) সেন্সর ব্যবহার করে সেখানে এই স্মার্টফোন RYYB (red yellow yellow blue) সেন্সর ব্যবহার করে। ফলে এটি দিয়ে তোলা ছবিতে পর্যাপ্ত ডিটেইলস পাওয়া যাবে।
স্মার্টফোনটিতে ToF লেন্স থাকায় পোট্রেট মোডেও ভালো ফটো তোলা যাবে। স্মার্টফোনটির ক্যামেরা দিয়ে ৬০ ফ্রেম রেটে ৪কে ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে।
সেলফি তোলার জন্য ফোনটির সামনে রয়েছে এফ/২.২ অ্যাপারচারের ৩২ মেগাপিক্সেল লেন্স এবং একটি ToF 3D ডেপথ-সেন্সিং লেন্স। এই স্মার্টফোন দিয়ে তোলা সেলফিতেও পর্যাপ্ত ডিটেইলস পাওয়া যাবে।
হুয়াওয়ের পি৪০ প্রো ২০১৮ সালের ফ্ল্যাগশীপ ফোন পি৩০ প্রো কে রিপ্লেস করে, যা এখনও একটি দুর্দান্ত ক্যামেরা ফোন। তবে পি৪০ প্রো ফোনটির একমাত্র নেতিবাচক দিক হলো এতে গুগলের প্লে সার্ভিস নেই।
4. Google Pixel 4 XL
আজকের সেরা ক্যামেরা ফোন এর লিস্টে ৪র্থ স্থানে রয়েছে গুগলের Pixel 4 XL। গুগলের তৈরি এই ফোন ক্যামেরার জন্য বেশ পরিচিত। এতে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ক্যামেরা প্রযুক্তি, যা ফোনটিকে অন্য সব ফোন থেকে ইউনিক করেছে।
গুগলের এই ফোনকে বেস্ট এআই ক্যামেরা ফোন বলা হয়ে থাকে। স্মার্টফোনের ক্যামেরায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে কিভাবে চমৎকার সব ফটো ক্যাপচার করা যায় তা গুগল প্রযুক্তি বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে।
আগের ফোনগুলোতে সিঙ্গেল লেন্স ব্যবহার করা হলেও এখন এই অবস্থান থেকে সরে এসেছে গুগল। গুগলের এই ফোনে থাকছে পিডিএএফ ও ওআইএসের সাথে এফ/১.৭ অ্যাপারচারের একটি ১২.২ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি লেন্স এবং এফ/২.৪ অ্যাপারচারের একটি ১৬ মেগাপিক্সেল টেলিফটো লেন্স।
আর ফোনটির সামনে রয়েছে এফ/২ অ্যাপারচারের ৮ মেগাপিক্সেল লেন্স এবং একটি ToF 3D ডেপথ-সেন্সিং লেন্স, যা “বোকেহ” ইফেক্ট তৈরি করতে সাহায্য করবে।
গুগলের ফোনগুলো সাধারণত কম আলোতে ভালো ফটো তোলাতে খুব পারদর্শী হয়ে থাকে। এই ফোনের ক্ষেত্রেও কোন ব্যতিক্রম নয়।
গুগল পিক্সেল ৪ এক্সএল কম আলোতে অসাধারণ সব ফটো তোলতে সক্ষম। এটি দিয়ে তোলা ছবি হুয়াওয়ের পি৪০ প্রো এর চেয়ে বেশি কালারফুল হয়ে থাকে।
ফোনটিতে গুগলের উন্নত ফটো-প্রসেসিং অ্যালগরিদম এবং স্বয়ংক্রিয় এইচডিআর মতো ফিচারগুলো থাকায় এটি দিয়ে এতো ভালো ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে।
এবারের গুগলের ফোনে টেলিফটো লেন্স থাকায় আগের ফোনগুলোর চেয়ে এর সাহায্য আরো ডিটেইলসে জুম-ইন-শট নেয়া যাবে। টেলিফটো লেন্সের মাধ্যমে ৮x জুমে ছবি তোলা যাবে।
ছবি তোলার পাশাপাশি ফোনটির সাহায্যে ৩০ ফ্রেম রেটে ৪কে ভিডিও এবং ৬০ ফ্রেম রেটে ১০৮০পি রেজ্যুলেশনে ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে।
গুগলের এই ফোনে কোন আল্ট্রা-ওয়াইড লেন্স নেই। যা ফোনটির একটি নেতিবাচক দিক বলা যেতে পারে। নিসন্দেহে এই কারণে ফোনটি ক্যামেরার দিক দিয়ে অ্যাপল, স্যামসাং এর ফোনগুলো থেকে পিছিয়ে আছে।
5. Honor 30 Pro
হুয়াওয়ের সাব ব্র্যান্ডের ফোন Honor 30 Pro এর ক্যামেরা অনেকাংশে হুয়াওয়ে পি৪০ প্রো এর মতোই। ফোন দুটির মাঝে তফাৎটা শুধু এর দামে।
এই ফোনটিতে আপনি পাবেন হাই ক্যামেরা স্পেসিফিকেশন তাও আবার পি৪০ প্রো এর চেয়ে কম দামে। ফোনটিতে থাকছে কোয়াড রিয়ার ক্যামেরা।
এতে রয়েছে এফ/১.৮ অ্যাপারচারের একটি ৪০ মেগাপিক্সেল সুপার-সেনসিং প্রাইমারি লেন্স, এফ/৩.৪ অ্যাপারচারের একটি ৮ মেগাপিক্সেল টেলিফটো লেন্স, এফ/২.২ অ্যাপারচারের একটি ১৬ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড লেন্স এবং ২ মেগাপিক্সেল ডেপথ-সেন্সিং লেন্স।
আর ফোনটির সামনে রয়েছে এফ/২ অ্যাপারচারের একটি ৩২ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি লেন্স এবং এফ/২.২ অ্যাপারচারের একটি ৮ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড লেন্স।
কম আলোতে দুর্দান্ত ফটো তোলা যাবে এই ফোন দিয়ে। ফোনটিতে ৫x অপটিক্যাল জুমের পাশাপাশি থাকছে ৫০x ডিজিটাল জুমের সুবিধা।
আগের ফোনটিতে RYYB সেন্সর না থাকলেও এবারের ফোনটির ৪০ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি লেন্সে RYYB (red yellow yellow blue) সেন্সর রয়েছে।
ফোনটির পেছনে থাকা কোয়াড ক্যামেরার মাধ্যমে ৬০ ফ্রেম রেটে ৪কে রেজ্যুলেশনে ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে। তবে এই ফোনে হুয়াওয়ের অন্যান্য ফোনের মতো গুগলের প্লে সার্ভিস নেই। যা ফোনটির একটি নেতিবাচক দিক বলা যেতে পারে।
6. Huawei Mate 30 Pro
লিস্টে থাকা হুয়াওয়ের আরেকটি সেরা ক্যামেরা স্মার্টফোন হলো Huawei Mate 30 Pro। ফোনটি রিলিজ হওয়ার পর ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে ডিএক্সও মার্ক র্যাংকিংয়ে সর্বোচ্চ রেটিং অজর্ন করেছিলো।
এই ফোনটিতেও থাকছে কোয়াড রিয়ার ক্যামেরা, এফ/১.৬ অ্যাপারচারের একটি ৪০ মেগাপিক্সেল সুপার-সেনসিং লেন্স, এফ/২.৪ অ্যাপারচারের একটি ৮ মেগাপিক্সেল টেলিফটো লেন্স, এফ/১.৮ অ্যাপারচারের একটি ৪০ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড লেন্স এবং একটি থ্রিডি ডেপথ সেনসিং লেন্স।
সেলফি তোলার জন্য ফোনটির সামনে রয়েছে একটি ৩২ মেগাপিক্সেল লেন্স এবং একটি থ্রিডি ডেপথ সেনসিং লেন্স। ফোনটিতে থাকছে আল্ট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল শটস, আল্ট্রা-ওয়াইড নাইট-শটস, পোর্টইট শটস ও বোকেহ ইফেক্টের সুবিধা।
এর ক্যামেরার সাহায্যে কম আলোতে ভালো ফটো তোলা সম্ভব, বিশেষত এর সেকেন্ড-লং-এক্সপোজার নাইট মোড ব্যবহার করে।
৪০ মেগাপিক্সেলের সুপার-সেনসিং ক্যামেরাটিতে আরওয়াইওয়াইবি কালার ব্যবহার করা হয়েছে, যা একে অনেক বেশি আলো ধারণ করতে সাহায্য করে থাকে।
ফোনটিতে থাকা টেলিফটো লেন্সের মাধ্যমে ৩x অপটিক্যাল জুমে ফটো তোলা যাবে। এছাড়া অপটিক্যাল জুমের পাশাপাশি ৫x হাইব্রিড এবং ৩০x ডিজিটাল জুমেও ফটো তোলা যাবে।
ফোনটিতে থাকা ক্যামেরার মাধ্যমে ৬০ ফ্রেম রেটে ৪কে রেজ্যুলেশনে ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে। স্লো-মোশনে ভিডিও ধারণের জন্য এতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫১২০০ আইএসও। এ ফোন দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৭৬৮০টি ফ্রেম ধারণ করা যাবে।
7. OnePlus 8 Pro
OnePlus 8 Pro লিস্টে থাকা আরেকটি সেরা ক্যামেরা স্মার্টফোন। ওয়ানপ্লাসের মতে এই ফোনে তাদের সবচেয়ে সেরা ক্যামেরা লেন্স ব্যবহার করা হয়েছে। ওয়ানপ্লাস ৮ প্রোতে থাকছে কোয়াড ক্যামেরা সেটআপ।
ফোনটিতে এফ/১.৮ অ্যাপারচারের একটি ৪৮ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি লেন্স, এফ/২.৪ অ্যাপারচারের একটি ৮ মেগাপিক্সেল টেলিফটো লেন্স, এফ/২.২ অ্যাপারচারের একটি ৪৮ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড লেন্স এবং একটি ৫ মেগাপিক্সেল ডেপথ সেন্সিং লেন্স রয়েছে।
আর সামনে থাকছে ১৬ মেগাপিক্সেল সেলফি লেন্স। আপনি যদি পোট্রেট মোডে ফটো তোলতে পছন্দ করেন তাহলে এই ফোনটি শুধুমাত্র আপনার জন্যই।
তাছাড়া এই ফোন দিয়ে দিনের আলোতে বেশ ভালো ফটো তোলা যাবে। নাইটস্কেপ ৩.০ মোড ব্যবহার করে রাতেও উজ্জ্বল এবং হাই ডিটেইলসে ফটো পাওয়া যাবে।
ফোনটিতে থাকা ৩x অপটিক্যাল জুমের সাহায্যে সর্বদা লং ডিস্টেন্সে হাই-রেজুলেশন ফটো তোলা যাবে। এছাড়াও ফোনটিতে থাকা কোয়াড ক্যামেরার মাধ্যমে ৬০ ফ্রেম রেটে ৪কে রেজ্যুলেশনে ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে।
8. Xiaomi Mi 10 5G
শাওমির ফ্ল্যাগশিপ ফোন Mi 10 এর ক্যামেরা দামের তুলানায় এক কথায় দুর্দান্ত। এই ফোনটিকে বলা যায় বেস্ট 'ভ্যালু ফর মানি' ফ্ল্যাগশিপ ফোন।
ফোনটিতে রয়েছে কোয়াড ক্যামেরা সেটআপ। এতে থাকছে এফ/১.৭ অ্যাপারচারের একটি ১০৮ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি লেন্স, এফ/২.৪ অ্যাপারচারের একটি ১৩ মেগাপিক্সেল আলট্রা ওয়াইড লেন্স, একটি ২ মেগাপিক্সেল ম্যাক্রো লেন্স এবং একটি ডেপথ সেন্সিং লেন্স।
আর ফোনটির সামনে থাকছে ২০ মেগাপিক্সেল সেলফি লেন্স। এই ফোন দিয়ে ভালো আলোতে দুর্দান্ত সব শট নেয়া যাবে। ফোনটিতে এআই ২.০ পিক্সেল-লেভেল অপটিমাইজেশন রয়েছে।
ফোনটির ক্যামেরা পট্রেট মোডে ব্যাকগ্রাউন্ডকে খুব সুন্দরভাবে ফোকস করতে পারে। এই ফোনে থাকছে সনি আইএমএক্স৬৮৬ সেন্সর। স্যামসাংয়ের আইএসও সেল প্রযুক্তিতে তৈরী এই ক্যামেরায় একদম কম আলোতেও অসাধারণ সব ছবি তোলা সম্ভব।
9. Google Pixel 4A
Google Pixel 4A ফোনটি গুগলের পিক্সেল ৪ এর অর্ধেক দামে পাওয়া যাবে। গুগলের এই মিডরেঞ্জ ফোনে থাকছে ফ্ল্যাগশিপ কোয়ালিটির ক্যামেরা।
এর পিছনে রয়েছে এফ/১.৭ অ্যাপারচারের একটি ১২ মেগাপিক্সেল লেন্স এবং সামনে রয়েছে এফ/২ অ্যাপারচারের একটি ৮ মেগাপিক্সেল লেন্স।
গুগলের উন্নত ফটো-প্রসেসিং অ্যালগরিদমের মাধ্যমে এর সিঙ্গেল ক্যামেরা দিয়েই দারুণ সব ফটো তোলা যাবে।
গুগল পিক্সেল ৪ এর মতো এই ফোন দিয়েও রাতে ভালো ফটো তোলা যাবে। নাইট মোডে এক্সপোজারের মাধ্যমে রাতকে দিনে রূপান্তর করা সম্ভব।
কম আলোতে ফটো তোলার ক্ষেত্রে এটি হুয়াওয়ে এর পি ৪০ বা আইফোন ১১ কেও হার মানাবে; যেগুলোর দাম এই ফোনের চেয়ে বেশি।
গুগলের এই ফোনটি হয়তো পাওয়ার ইউজারদের জন্য স্বপ্নের ফোন নয়, তবে কেউ যদি কম বাজেটে ভালো মানের ক্যামেরা ফোন চায় তাহলে তার জন্য এটি নিসন্দেহে একটি বেস্ট চয়েস।
10. Sony Xperia 1 II
লিস্টে থাকা আরেকটি ভালো ক্যামেরা ফোন হলো Sony Xperia 1 II। আপনি যদি স্মার্টফোনে হাই কোয়ালিটি ভিডিও ক্যাপচার করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে এই ফোনটি শুধুমাত্র আপনারই জন্য।
ফোনটির পেছনে থাকছে একটি ডেপথ সেন্সিং লেন্স এবং তিনটি ১২ মেগাপিক্সেল লেন্স; যার একটি ওয়াইড, একটি আল্ট্র ওয়াইড ও একটি টেলিফটো। সামনে থাকছে একটি ৮ মেগাপিক্সেল লেন্স।
স্মার্টফোনে ভিডিওগ্রাফির জন্য বর্তমানে এটিই সেরা ফোন। এই ক্যামেরা ফোন দিয়ে সম্পূর্ণ ম্যানুয়ালি ভিডিও শট নেয়া যাবে।
তাছাড়া এই ফোন দিয়ে ২১:৯ অনুপাতে ভিডিও ক্যাপচার করা যাবে এবং তা প্রিমিয়ার প্রো তে প্রসেসও করা যাবে। সনির এই ফোনের সাহায্যে ভিডিও রেকর্ড করার পাশাপাশি ভালো ফটোও তোলা যাবে; বিশেষ করে পোট্রেট মোডে।
ফোনটিতে থাকা ৩x অপটিকাল জুমের সাহায্যে লং ডিস্টেন্সে হাই-রেজুলেশনে ফটো তোলা যাবে। শক্তিশালী চিপসেটের সাথেতে ৪কে এইচডিআর কোয়ালিটির ডিসপ্লেও রয়েছে।
এই ছিলো বর্তমান সময়ের ১০টি সেরা ক্যামেরা ফোন। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করি আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে।
No comments